ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার ১০টি সহজ উপায়
পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেইসবুক। বর্তমানে ফেইসবুক একাউন্ট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩ বিলিয়ন এবং এর পরিমাণ দিন দিন আরো বেড়েই চলেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবসর সময়গুলো কে আমরা ফেইসবুক ব্যাবহার করার মাধ্যমেই কাটিয়ে থাকি। তবে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা ফেইসবুক নির্ভর এমন কাজের সংখ্যাও বেড়ে গিয়েছে। ফলে এখন কাজের ক্ষেত্রেও আমাদের ফেইসবুকের সহায়তা নিতে হয়।
যদি আমরা এই অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে কিছু টাকা আয় করতে পারি তবে কেমন হয় বলুন তো.? ফেইসবুক বর্তমানে আমাদের সেই সুযোগটিও করে দিয়েছে। ফেইসবুক এখন ২০ হাজার থেকে কয়েক লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত ইনকামের সুযোগ দিচ্ছে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়
১. ফেইসবুক মার্কেটপ্লেসঃ
ফেইসবুক থেকে আয় করার সহজ ও জনপ্রিয় উপায় গুলোর অন্যতম একটি উপায় হলো ফেইসবুক মার্কেটপ্লেস। আপনার যদি ক্ষুদ্র কিংবা বৃহৎ কোনো ব্যাবসা থাকে তাহলে সেটি ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচালনা করতে পারবেন। আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন এবং কোনোরকম ওয়েবসাইট ছাড়াই কেনাবেচা করতে পারবেন। তাছাড়া বর্তমানে ফেইসবুক বিজনেস আইডি তৈরি করার নতুন ফিচার যুক্ত করেছে ফলে বেচাকেনা আরো সহজতর হয়ে ওঠেছে৷ অতএব বলাই বাহুল্য যে ফেইসবুক ব্যাবসা সম্প্রসারণ ও গতিময়তা বর্তমানে বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
২. ফেসবুক পেইজঃ
ফেইসবুক থেকে আয় করার আরেকটি সহজ উপায় হলো ফেইসবুক পেইজ। ফেইসবুকে বিজনেস করতে চাইলে আপনি একটি বিজনেস পেইজ খুলে নিতে পারবেন এবং আপনার পেইজে পণ্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যাবসার প্রসার করতে পারবেন। তবে শুধু ফেইসবুক পেইজ থেকে ব্যাবসার মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবেন ব্যাপারটি এমন নয়৷ একটি ফেইসবুক পেইজ যেকেনো কারণে তৈরি করা যেতে পারে। পেইজের লাইক ও ফলোয়ারের উপর নির্ভর করেও ফেইসবুক থেকে ইনকাম করা যায়। এক্ষেত্রে ফেইসবুক থেকে প্রতিমাসে একটি পারিশ্রমিক দেয়া হয়। তাছাড়া ফেইসবুক পেইজ বিক্রি করার মাধ্যমেও টাকা আয় করা যায়।
৩. ফেইসবুক গ্রুপঃ
বিশাল সংখ্যার সদস্য নিয়ে গঠিত ফেসবুক গ্রুপ থেকেও সহজে টাকা আয় করা যায়। আপনার যদি একটি ফেসবুক গ্রুপ থাকে তাহলে মনিটাইজেশন অন করার মাধ্যমে সেই গ্রুপের এক্টিভিটি এর উপর ডিপেন্ড করে টাকা আয় করতে পারেন। যেকোনো বিষয় নিয়ে ফেইসবুক গ্রুপ তৈরি করা যায়। যেমন ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, বিনোদন মূলক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি। তাছাড়া ফেইসবুকে বাই এন্ড সেল গ্রুপ অপেন করে সহজে ব্যাবসা করা যায় এবং ব্যাবসার পরিধির প্রসার করা যায়।
৪. ব্লগিংঃ
আজকাল ফেসবুকে ব্লগিং করে টাকা আয়ের প্রতিযোগিতা অগণিতভাবে বেড়েই চলেছে৷ যে কেনো বিষয় নিয়ে ব্লগ তৈরি করা যায় যেমন ভ্রমণ, কারব্লগ, মটোব্লগ, ফুডব্লগ, ডিভাইস ব্লগ ইত্যাদি। ব্লগিং সকলের জন্য একটি মজাদার বিষয় যার ফলে ইহা হতে খুব সহজেই ভাইরাল হওয়া যায়।
৫. কন্টেন্ট ভিডিওঃ
বর্তমানে ফেসবুক থেকে আয় করার অন্যতম একটি উপায় হলো কন্টেন্ট ভিডিও তৈরি করা। কন্টেন্ট রাইটিং এর পাশাপাশি কন্টেন্ট ভিডিও ও তৈরি করা যায়। এতে প্রচুর পরিমানে লাইকস এন্ড ভিউস পাওয়া যায়। ফলে সহজেই ফেইসবুক মনিটাইজেশন এর অপশন পাওয়া যায় এবং ইনকাম করা যায়।
৬. ফেইসবুক রিলসঃ
সম্প্রতি ফেইসবুকে একটি নতুন ফিচার যুক্ত হয়েছে যার নাম হলো ফেইসবুক রিলস। টিকটক, ইনস্টাগ্রাম রিলস বা ইউটিউবের শর্টস ভিডিও অপশনের মত একটি ফিচার হলো ফেইসবুক রিলস। ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করেও বর্তমানে ফেইসবুক থেকে টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
৮. এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জানি। নিজের কোনো ব্যাবসা বা পণ্য না থাকার পরেও অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যাক্তির পণ্য কমিশনভিত্তিক নিজে বিক্রি করার পদ্ধতিকে এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে। ফেইসবুকে এই ব্যাবসা রিসেলিং ব্যাবসা নামেই অধিক পরিচিত। অর্থাৎ কমিশনের ভিত্তিতে অন্যের পণ্য সেল করা। বর্তমানে রিসেলিং ব্যাবসার মাধ্যমেও ফেইসবুক থেকে অনেক টাকা আয় করা যায়।
৯. আর্টিকেল রাইটিংঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহের মধ্যে জনপ্রিয় একটি কাজ হলো আর্টিকেল রাইটিং। আগে আর্টিকেল রাইটিং এর কাজের জন্য বিভিন্ন আউটসোর্সিং সাইটে ঘুরাঘুরি করতে হতো তবে বর্তমানে ফেসবুকে আর্টিকেল রাইটিং এর অনেক কাজ পাওয়া যায়। দিন দিন ফেইসবুকে বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল ও ওয়েবসাইটের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এই সকল ওয়েব পোর্টালে সহজেই আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ পাওয়া যায়। তাছাড়া ফেইসবুকে “ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল রাইটিং প্রোগ্রাম ” অপশন রয়েছে।
১০. রিমোট জবঃ
ফেসবুকে এমন অনেক বড় বড় গ্রুপ এবং পেজ রয়েছে যেখানে তাদের গ্রুপ বা পেইজ কন্ট্রোল করার জন্য দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার বা মডারেটরের প্রয়োজন হয়ে থাকে৷ এসব কাজের মধ্যে পেইজের কমেন্টের রিপ্লাই দেয়া, গ্রাহকদের সেবা, কল সেন্টার এক্সিকিউটিভ, পোস্ট শেয়ারিং ইত্যাদি থাকতে পারে। আপনার যদি এসব বিষয়ে দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজ পেয়ে যাবেন যা আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন। এবং এক্ষেত্রে আপনাকে মাস শেষে পারিশ্রমিক দেয়া হবে।
উপর উল্লেখিত উপায়ের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা আয় করতে হয় তার একটা ধারনা পেয়েছেন।