এলোভেরার উপকারিতা-অপকারিতা এবং অ্যালোভেরা খাওয়ার নিয়ম
অ্যালোভেরার ১০ টি কার্যকরী উপকারিতাঃ
আমাদের আশেপাশে এমন অনেক ঔষধিগুণ সম্পন্ন গাছপালা রয়েছে যাদের গুনাগুনের সম্পর্কে আমরা বিন্দুমাত্রও অবগত নই। আজকে আমরা তেমনি একটি উদ্ভিদের সম্পর্কে জানবো যার উপকারিতার কোনো শেষ নেই। নাম হলো “অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী” যা আমাদের চারপাশে সর্বদাই দেখা যায়।
চলুন তাহলে অ্যালোভেরার গুণাবলীর সম্পর্কে ধারনা নেওয়া যাকঃ
১. অ্যালোভেরার রস বা জুসঃ অ্যালোভেরা কান্ডবিহীন ও শাসযুক্ত রসাল একটি গাছ যা বিভিন্ন রাসায়নিক ও খনিজ উপাদান দিয়ে ভরপুর। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াস, জিঙ্ক, অ্যামিনো এসিড এবং আয়রনের পাশাপাশি ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ও বি২ এর মতো জরূরী উপাদান। আর এই সকল উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য কত উপকারী তা বলার অবকাশ রাখে না। সুতরাং বুঝাই যাচ্ছে অ্যালোভেরা আমাদের শরীরের পক্ষে কতটা উপকারী।
২. সূর্যের আলো হতে মুখের ত্বক রক্ষাঃ যদি আপনার ত্বক খুবই সেন্সিটিভ হয়ে থাকে বা রোদে গেলে ত্বক বার্ন হয়ে থাকে তাহলে অ্যালোভেরা এই সমস্যা সমাধানের একটি কার্যকর উপায়। সরাসরি অ্যালোভেরার আঠালো অংশটি দিনে দু’বার আপনি মুখের ত্বকের মধ্যে ব্যাবহার করতে পারেন। ফলে অ্যালোভেরাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ আপনার ত্বক মসৃণ এবং কোমল রাখতে সহায়তা করে৷
৩. চুলের সমস্যা সমাধানঃ বিভিন্ন গবেষনায় হতে দেখা গেছে ত্বক ও স্বাস্থ্যের পাশাপাশি অ্যালভেরা চুলের সমস্যা সমাধানে অনেক কার্যকরী। অ্যালোভেরাতে থাকা কিছু এনজাইম চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অ্যালোভেরার রস চুলের কন্ডিশনার ও রং হিসেবেও ব্যাবহার করা যায়। তাছাড়া চুল পড়া, টাক পড়া, খুশকি, রুক্ষতা, অ্যালোপেসিয়া ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে অ্যালোভেরার উপকারিতা অপরিসীম। অ্যালোভেরা জুস পান করার সাথে সাথে সরাসরি চুলে ও মাথার ত্বকেও ব্যবহার করা যায়।
৪. চর্মরোগ দূরীকরণঃ অ্যালোভেরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য থাকার ফলে যদি অ্যালোভেরা জেল শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যাবহার করা হয় তাহলে ত্বককে যেকোনো ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। তাছাড়া অ্যালোভেরা ত্বকের শুষ্কতা, ব্রন, প্রদাহ, এরিথেমা ইত্যাদি দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
৫. ওজন কমাতে অ্যালোভেরাঃ শরীরের ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হলো দেহে মেদের পরিমান বেড়ে যাওয়া। অ্যালোভেরা জুসে এক ধরনের এন্টিওবেসিটি প্রভাব তৈরি হয়ে থাকে যা আমাদের শরীরের স্হূলতা কমাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। সুতরাং ওজন কমাতে সুষম ডায়েট ও ব্যায়ামের পাশাপাশি অ্যালোভেরা খুবই উপকারী।
৬. হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরাঃ হজম সমস্যার মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূরীকরণে অ্যালোভেরার ভূমিকা অনস্বীকার্য। অ্যালোভেরাতে থাকা লেক্সিটিক প্রভাব কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করতে সাহায্য করে পাশাপাশি বিভিন্ন ডাইজেস্টিভ সমস্যা কাটাতেও সাহায্য করে।
৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ অ্যালোভেরা জুস রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন একগ্লাস অ্যালোভেরা জুস পান করা উচিত। এতে রক্তের সুগার লেভেল ঠিক থাকবে এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।
৮. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা ফাইটোস্টেরল শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও এটি লিপিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা। অ্যালোভেরার আরেটি অন্যতম উপাদান হলো গ্লুকোমানেন যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষণের মাধ্যমে দেখা যায় অ্যালোভেরা রক্তে শ্বেত রক্ত কণিকা (R.B.C) বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শ্বেত রক্তকণিকা দেহের বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
১০. দাঁতের যত্নে অ্যালোভেরাঃ দাঁতের সমস্যা সমাধানে অ্যালোভেরার রস জাদুর মতো কাজ করে। অ্যালোভেরাতে অ্যান্টব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি রয়েছে। যা দাঁতের মাড়ি ও ক্ষয় রোধে সহায়তা করে এবং মাড়ির ব্যাথা উপশম করে।
আর্টিকেলটি ভাল লাগলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে সাথে ফেসবুকে শেয়ার করুন এবং এই ধরনের আরো বিভিন্ন পোস্ট পেতে আমাদের সাইটটি ঘুরে দেখুন।