বিশ্বের সেরা ১০ অনলাইন শপিং সাইট
তথ্যপ্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবন-যাত্রার মানেরও অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। প্রযুক্তির বদৌলতে আজে পুরো বিশ্ব আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। যেকোনো কাজ এখন ঘরে বসেই করা যায়। তার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো অনলাইন শপিং। আগে মানুষ যেখানে বাজারে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে কেনাকাটা করতো সেখানে প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ঘরে বসে মূহুর্তের মধ্যে কেনাকাটা সম্ভব বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। ফলে আমাদের সময় ও শ্রম দুটিই লাঘব হয়।
বর্তমানে অনলাইন শপিং সাইটের ব্যাবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ক্রেতার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী দিনের শপিং মল গুলো হবে অনলাইন কেন্দ্রিক।
যেহেতু ই-কমার্স সাইটের ব্যাবহার দিন দিন বাড়ছে তাই আজ আমরা এমন ১০ টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কথা বলবো যা সারা বিশ্বে অনেক জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত।
বিশ্বের জনপ্রিয় ১০ টি ই–কমার্স কোম্পানি
১. আলিবাবা (Alibaba) : চীনা প্রতিষ্ঠান আলিবাবা বিশ্বের জনপ্রিয় একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। আমরা সকলেই “জ্যাক-মা” এর জীবনের গল্প শুনেছি৷ তিনিই হলেন আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালে আলিবাবা ডট কম প্রতিষ্ঠিত হয়। এশিয়া মহাদেশের পাশাপাশি সারাবিশ্বে আলিবাবা ক্রেতা বিক্রেতাদের মাঝে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। বর্তমানে এতে দুই মিলিয়নের চেয়েও বেশি সরবরাহকারী নিবন্ধিত রয়েছে। আলিবাবা হলো সহজ, দ্রুত চেকআউট ও নিরাপদ অর্থ প্রদানের একটি প্রবেশপথ।
২. অ্যামাজন (Amazon) : অ্যামাজন হলো বিশ্বের শীর্ষ একটি ই-কমার্স সাইট। এটি একটি আমেরিকান প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৪ সালে “জেফ বেজোস” অ্যামাজন ডট কম নামের ওয়েবসাইট চালু করেন। গবেষণার তত্ত্ব হতে জানা যায় অ্যামাজনে প্রতি সেকেন্ড ৬৪ টি পণ্য বিক্রি হয়৷ অ্যামাজন ওয়েবসাইটের ইন্টারফেসের ব্যাবহার খুব সহজ। পণ্যের সাশ্রয়ী মূল্য এবং বিভিন্ন ছাড়ের কারণে অ্যামাজন সারা বিশ্বে জনপ্রিয়।
৩. ই–বে (e-Bay) : ১৯৯৪ সালে আমেরিকান ই-কমার্স কোম্পানি ই-বে প্রতিষ্ঠিত হয়। জনপ্রিয়তার দিকে দিয়ে শীর্ষ মার্কেট প্লেসের মধ্যে ইহা একটি। এটি একটি সি-টু-সি ও বি-টু-সি প্রতিষ্ঠান। ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই আকৃষ্ট হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে তারা বিশেষ বিশেষ ছাড় প্রদান করে।
৪. ফ্লিপকার্ট (Flipkart) : ফ্লিপকার্ট ভারতসহ এশিয়া মহাদেশের শীর্ষ স্হানীয় একটি ই-কমার্স সাইট৷ শুরুর দিকে এটি একটি বই বিক্রির দোকান হিসেবে চালু হয়েছিলো। বর্তমানে সব ধরনের প্রোডাক্ট ফ্লিপকার্টে পাওয়া যায়৷ সম্প্রতি তাদের মোট মূলধনের পরিমান ১১ বিলিয়ন।
৫. ওয়ালমার্ট (Walmart) : বিশ্বের জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেট প্লেসের একটি ওয়ালমার্ট।১৯৬২ সালে স্যাম ওয়ালটন ওয়ালমার্ট স্টোর প্রতিষ্ঠা করেন। এটি আমেরিকান একটি প্রতিষ্ঠান। ইহা একটি বহুজাতিক রিটেইল কর্পোরেশন। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের অন্যতম একটি ক্রেতা হলো এই প্রতিষ্ঠান। এই ওয়েবসাইটের ইন্টারফেসও বেশ ব্যাবহারকারী-বান্ধব।
৬. রাকুতেন (Rakuten) : জাপানের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হলো রাকুতেন। ১৯৯৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এটি একটি ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন রিটেইলিং প্রতিষ্ঠান। এটির ব্যাবসার ধরন B2B & B2C। বর্তমানে ২৯ টিরও বেশি দেশে রাকুতেন এভেইলেবল।
৭. যালানডো (Zalando) : বৃহত্তর মার্কেট প্লেসের মধ্যে যালানডো অন্যতম। ২০০৮ সালে জার্মানিতে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এটি একটি ইউরোপিয়ান ই-কমার্স কোম্পানি। বর্তমানে তাদের মোট মূলধনের পরিমান প্রায় ১৫.৭২ বিলিয়ন। ইলেকট্রনিকস, ফ্যাশন, লাইফস্টাইলসহ বিভিন্ন ধরেনর পণ্য এখানে পাওয়া যায়।
৮. বেস্ট বাই (Best Buy) : বেস্ট-বাই হলো একটি রিটেইল আউটলেট প্রতিষ্ঠান যেখানে শুধুমাত্র ইলেকট্রনিকস পণ্য যেমন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ,স্মার্টওয়াচ, স্পিকার ইত্যাদি বিক্রি হয়ে থাকে৷ তাদের আউটলেটের কারণে বেস্ট-বাই অনেকটা শক্তিশালী। কেননা কোনো ক্রেতা অনলাইনে পণ্য কিনে নিকটস্ক আউটলেট থেকে নিয়ে যেতে পারে। ফলে ক্রেতাদের ভোগান্তি কম হয়।
৯. জেডি ডট কম (JD.Com) : ইহা একটি চায়নাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৮ সালে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। জিংডং ডট জেডি ডট কম নামেও এটি পরিচিত। এটি একটি B2C রিটেইল প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে তাদের মোট মূলধন ৯৩.১৫ বিলিয়ন। তারা তাদের হাই-টেক এআই ডেলিভারির কারণে বেশ জনপ্রিয়।
১০. ফেইসবুক ( Facebook) : শুনতে অবাক লাগলেও ফেইসবুক বর্তমানে অনলাইন মার্কেটিং এর জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যদিও এটি অন্যদের মতো কোনো ই-কমার্স সাইট না কিন্তু ফেইসবুকের মার্কেটপ্লেস ফিচারটি অনেকটা ই-কমার্স সাইটেরই কাজ করছে এবং দিন দিন এর ব্যাবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে সকল জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটগুলো ফেইসবুকের মাধ্যমে নিজেদের বিজ্ঞাপন করছে। তাই আমাদের লিস্টের সর্বশেষ ই-কমার্স সাইটে “ফেইসবুক” স্হান দিয়েছি।