বর্তমান সময়ের ১০ টি লাভজনক ব্যাবসার আইডিয়া ২০২২-২০২৩
বর্তমান সময়ের ১০ টি লাভজনক বিজনেস আইডিয়া
জীবনে উন্নতি সাধন করতে হলে চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যাবসার পেছনে ছুটা উচিত। কেননা এতে টাকা আয় করার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি বেকারত্বের সমস্যা হতে দেশকে মুক্ত করা যায়। ব্যাবসা কিন্তু ছোটোখাটো কোনো ব্যাপার না, চাকরি করতে যেমন বিভিন্ন দক্ষতার প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনি ব্যাবসা করার জন্য প্রয়োজন হয় অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্য দক্ষতার৷ তাছাড়া বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা বেশ প্রসার হয়েছে। তবে ব্যাবসার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মূলধন। অনেকে মূলধনের কারণে ব্যাবসা করতে পারেন না বা ভয় পান। সুষ্ঠুভাবে ব্যাবসা করতে জানলে অল্প মূলধন হতেও অনেক টাকার ব্যাবসাতে পরিণত করা যায়।
আজকে আমরা অল্প টাকার মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো
১. ফুড কার্টঃ খুব অল্প টাকার মধ্যেই একটি ফুড কার্ট তৈরি করা যায়৷ সঠিক স্হান ও খাবার শনাক্ত করে এই ব্যাবসা শুরু করলে খুব অল্প সময়ে পরিচিতি লাভ করা যায়৷ সারাদেশে ব্যস্ত নগরীর পাশাপাশি বিভিন্ন দর্শন স্হানে এই ব্যাবসার পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছোট ফুড কার্ট কে প্রসার করে একসময় বড় রেস্টুরেন্টও তৈরি করা যায়৷
২. কফি শপ/ কফি হাউজঃ কফি পছন্দ করে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে৷ সারাদিন কাজ ও ব্যস্ততার মাঝে যদি এক কাপ কফি না হয় তাহলে অনেকের চলে না। তাই চলে যায় আশেপাশের কোনো কফি হাউজে৷ অল্প টাকার মধ্যেও এই ব্যাবসাকে প্রসার করা যায়। এক্ষেত্রে সঠিক স্হান বাছাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩. ক্যাটারিং বিজনেসঃ আমরা অনেকেই আছি যারা বিভিন্ন ধরনের রুচিসম্মত খাবার বানাতে পছন্দ করি৷ এই শখ টিকেও ব্যাবসায় পরিণত করা যায়। বিভিন্ন অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের দৈনিক খাবারের অর্ডার নিয়ে খুব সহজেই সমৃদ্ধি করা যায়। এক্ষেত্রেও তেমন বেশি মূলধনের প্রয়োজন পড়ে না।
৪. ডেলিভারি সার্ভিসঃ আজকাল তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে অনলাইন ব্যাবসা অনেকটা প্রসারিত হয়ে গিয়েছে৷ প্রত্যেকে ঘড়ে বসে নিজের পছন্দের কেনাকাটা সেরে ফেলছে। এক্ষেত্রে ই-কমার্স সাইটগুলো ও সাধারন অনলাইন বিক্রেতাদের ডেলিভারি ম্যানের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে আপনি একটি ডেলিভারি এজেন্সি চালু করে তাদের সাথে চুক্তির ভিত্তিতে ডেলিভারি সার্ভিস প্রোভাইড করতে পারেন। পরবর্তীকালে এই এজেন্সিকে বড় কোম্পানিতে রূপ দেয়ার বিরাট সুযোগ রয়েছে।
৫. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর ব্যবসাঃ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অত্যান্ত শৌখিন একটি কাজ৷ পাশাপাশি এই ব্যাবসার চাহিদা অফুরন্ত। অনেক ধরনের ছোট থেকে বড় ইভেন্টের কাজ পাওয়া যায়৷ যেমন জন্মদিনের পার্টি, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান, বিবাহের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ধরনের বার্ষিকী ইত্যাদি। আপনি চাইলে অল্প টাকা ইনভেস্টের মাধ্যমে ছোট ইভেন্ট দিয়ে এই ব্যাবসা চালু করতে পারেন।
৬. হোম সার্ভিস বা হাউস শিফটিংঃ দিন দিন মানুষের ব্যাস্ততা বেড়েই চলেছে। ফলে নিজের ঘরের বিভিন্ন কাজ করার সুযোগই সৃষ্টি হয় না৷ এক্ষেত্রে তারা থার্ড পার্টির সাহায্য নিতে বাধ্য হয়৷ বাড়িঘড় পরিষ্কার, বাগান সেবা, ঘড় বদলের আসবাবপত্র বহন করা ইত্যাদি সার্ভিসের জন্য হোম সার্ভিসের কাজ শুরু করা যেতে পারে। খুবই অল্প টাকা বা বিনা পুঁজিতে এই ব্যাবসা শুরু করা যায়।
৭. ইন্টেরিয়র ডিজাইন ব্যাবসাঃ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মতোই আরেকটি শৌখিন ব্যাবসা হলো ইন্টেরিয়র ডিজাইন। প্রত্যেকে চায় নিজেদের বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান সাজানো গোছানো ও দৃষ্টিনন্দন হোক। তাই এই কাজের জন্য ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের প্রয়োজন পড়ে। নিজের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই এই ব্যাবসা শুরু করা যায়। এক্ষেত্রে বেশি পুঁজির দরকার হয় না, এডভান্স নেয়ার মাধ্যমেই কাজ শুরু করা যায়।
৮. প্রফেশনাল ফটোগ্রাফি বিজনেসঃ কাজে স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা, শৌখিনতা ও মানসম্মত পারিশ্রমিক সম্পন্ন একটি কাজ হলো ফটোগ্রাফি। সব ধরনের বিয়ে কিংবা অনুষ্ঠানে একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ও তার টিমের বেশ চাহিদা রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার দক্ষতা ও সৃজনশীলতাই আপনার পরিচয়ের মূল বাহক৷ তাছাড়া খুব অল্প টাকার মধ্যে এই কাজ শুরু করতে পারেন শুধুমাত্র প্রয়োজন ভালো ক্যামেরা ও যন্ত্রাদি এবং বৃহৎ পরিসরে মার্কেটিং।
৯. প্রসাধনী বা কসমেটিকস ব্যাবসাঃ প্রসাধনী মহিলাদের একটি মৌলিক চাহিদা। কসমেটিকস বিক্রির ব্যাবসা হতে পারে একটি লাভজনক ব্যাবসা। তাছাড়া ইহা অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও বেশি জনপ্রিয় একটি ব্যাবসা। নিত্য নতুন ও অরিজিনাল প্রোডাক্টের চাহিদা সর্বদা লেগেই থাকে। এই ব্যাবসায় একটি পণ্যের শতকরা ২০ থেকে ৪০ ভাগ পর্যন্ত লাভ করা যায়৷ সঠিক স্হান নির্বাচন, গ্রাহকের সাথে ভালো ব্যবহার ও মানসম্মত পণ্য এই ব্যাবসাকে সফল করতে সাহায্য করে।
১০. ইলেকট্রনিকস এক্সেসোরিজ বা গ্যাজেট বিজনেসঃ বর্তমানে ইলেকট্রনিকস গ্যাজেটের বেশ চাহিদা রয়েছে৷ পাশাপাশি মোবাইল কিংবা কম্পিউটারের বিভিন্ন এক্সেসোরিজ এর চাহিদা তো রয়েছে বটেই। তাছাড়া একটি দোকান ভাড়া নিয়ে এই সকল এক্সেসোরিজ বিক্রির পাশাপাশি কাগজপত্র প্রিন্টিং, ফটোকপি, মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল রিচার্জের ব্যাবসা করতে পারেন৷ দৈনন্দিন কাজে এই সকল জিনিসের প্রয়োজন সর্বদা লেগেই থাকে৷ ব্যস্ত আবাসিক এলাকা, অফিস এলাকা, স্কুল কলেজ বা ইউনিভার্সিটি এলাকা এই ব্যাবসার জন্য উত্তম জায়গা। অনেক অল্প টাকা ও ছোট স্হান সম্পন্ন দোকান নিয়ে এই ব্যাবসা পরিচালনা করা যায়।