ব্যাবসায় প্রয়োজনীয় ১০ মোবাইল অ্যাপ
আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হন তাহলে আপনার জন্যই আজকের এই পোস্ট।মানব সভ্যতার শুরু থেকে প্রাচীনতম কাজ গুলোর মধ্যে ব্যাবসা একটি। সময়ের সাথে সবকিছুর মতো ব্যাবসায়ও এসেছে পরিবর্তন। অনলাইন ও টেকনোলজির ছোঁয়ায় ব্যাবসা যেমন হচ্ছে গতিশীল তেমনি বাড়ছে প্রচার প্রসার এবং সেই সাথে বাচছে মূল্যবান সময়। তাই আজকে আপনাদের বিজনেসে সহযোগী এমন কয়েকটি দেশ সেরা অ্যাপস এর কথা বলব, যেগুলো আপনার ব্যাবসাকে আরো সহজ এবং লাভবান করবে।
১. গুগল মাই বিজনেস
গুগল মাই বিজনেস যেকোন বিজনেসের জন্য একটি আশীর্বাদ এর মত। এটি গুগল.কম এর একটি অ্যাপ। কিন্তু এটি একটি ফ্রি বিজনেস লিস্টিং অ্যাপ। এটি আপনার বিজনেসের ডিটেইল, ফটো, লোকেশন, সার্ভিস, প্রোডাক্ট সব কিছু কাস্টমার দের সাথে শেয়ার করতে সাহায্য করে। এই অ্যাপ এ একটি প্রোফাইল ক্রিয়েট করে এটি মাধ্যমে আপনার বিভিন্ন ভিসিবিলিটি বাড়ানো পসিবল হয় থেকে। এই অ্যাপ এ প্রোফাইল বানানোর ফলে বিভিন্ন গুগল সার্ভিস যেমন, গুগল সার্চ, গুগল ম্যাপ, গুগল শপিং ইত্যাদি তে আপনার বিজনেস কে শো করা হয়। এজন্য ব্যাবসার জন্য গুগল মাই বিজনেস একটি সেরা অ্যাপ।
২. টালি খাতা
বর্তমানে আপনার ব্যবসার সকল হিসাব রাখার জন্য টালি খাতা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ইউজার সমৃদ্ধ দেশের সেরা অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো বিজনেসের পাই টু পাই হিসাব, টাকা জমা, লেনদেনের এবং বাকি অর্থের ও হিসাব পাওয়া যায়। সব ধরনের হিসাব একজন বিজনেসের ম্যানের জন্য খাতায় রাখার পাশাপাশি এই এ্যাপে খুব সহজেই রাখা যায়, বিভিন্ন অসুবিধা থেকে বাঁচিয়ে একদম সঠিক হিসাবের জন্য বিজনেসের সকল হিসাব নিকাশের কাজে এটি একটি অন্যতম সেরা অ্যাপ।
৩. হিসেব নিকেশ : মোবাইল মানিব্যাগ
এটি ও দৈনিক হিসাব বিকাশ রাখার জন্য সেরা একটি অ্যাপ। এর ইউজার ১ লাখের ও বেশি। এটি টালি খাতা এর সাথে তুলনা যোগ্য নয়, কিন্তু সব ধরনের হিসাব , জমা, বাকি এগুলো কাজের জন্য আরেকটি সফল অ্যাপ হচ্ছে মোবাইল মানিব্যাগ। এটি ও বিজনেসের জন্য ব্যবহৃত আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় অ্যাপ।
৪. sManager: ব্যবসা চালানোর সুপার অ্যাপ
এই অ্যাপ এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র মাঝারি উদ্যোক্তা র সাধারণত সাহায্য পেতে থাকবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে ৬৪ টি জেলায় আপনার পন্য ডেলিভারি সম্ভব, আপনি টপ আপের মাধ্যমে বাড়তি আয় ও করতে পারেন, এই অ্যাপের প্রোফাইল ক্রিয়েটার পর বিভিন্ন কাস্টমার সাপ্লাইইয়ার দের এক লিস্ট এ রাখতে পারবেন সুবিধা মত এবং সব ধরনের বিক্রি ক্রয়ের পূর্ন হিসাব ও রাখতে পারেন। এছাড়াও এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনার বাকিতে ক্রয় করা কাস্টমার দের বাকির কথা মনে করিয়ে দিতে পারেন নোটিফিকেশনের এর মাধ্যমে খুব সহজেই। যেকোনো অনলাইন বিজনেসের জন্য এটি একটি অন্যতম কার্যকরী অ্যাপ।
৫. Daraz(দারাজ)
আপনি যদি বাংলাদেশের কোন বেস্ট অনলাইন শপিং সাইট এর নাম জানতে চান, তাহলে প্রথমেই আপনার উত্তর আসবে Daraz অ্যাপ।কারণ আপনি যদি একজন বিজনেসম্যান হয়ে থাকেন, আপনি যেকোনো ধরনের প্রোডাক্ট সেলিং এর জন্য অনলাইন মাধ্যম হিসেবে দরাজ অ্যাপ কে কাজে লাগিয়ে আপনার বিজনেস এবং সেলিং অনেক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তারা যে পরিমাণ সেলস মার্কেটিং, সেলস প্রমোশন করেছে এবং করেই যাচ্ছে, অবস্থা টা এমন দাঁড়িয়েছে যেন অনলাইন শপিং বলতেই মনে হয় দরাজ থেকে কিনা। দরাজ এমন একটি যেই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি প্রায় সবকিছু কিনতে পারবেন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে দরকারি, বিনোদন , ব্যবহার যোগ্য যত যা আছে, প্রায় সব ই আপনি Daraz অ্যাপ ব্যবহার করে বিক্রি করতে পারেন। এককথায় ব্যবসার জন্য বাংলাদেশ এ দারাজ অন্যতম সেরা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যা একটি মোবাইল অ্যাপ দ্বারা চালিত।
৬. ShopUp Reseller
এটি বাংলাদেশের রিসেলিং এর জন্য ১ নং অ্যাপ। অনেকেই আছে ব্যবসায়ী হতে চান কিন্তু ক্ষুদ্র ক্যাপিটাল এর জন্য বড় ব্যবসা দাড় করাতে পারছেন না। তাহলে এই অ্যাপ আপনার জন্য। শপআপ আপনাকে দিবে বিভিন্ন ধরনের পন্য। আপনি যেগুলো রিসেল করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এখানে পুজি ছাড়া ঘরে বসে পাইকারি ব্যাবসা করো সম্ভব, এই অ্যপে আপনি প্রোডাক্ট পছন্দ মত বেছে নিয়ে দাম ছবি, কমিশন ইত্যাদি দেখে যাচাই করে আপনার কাস্টমারের কাছে বিক্রি করা শুরু করতে পারেন।এর মাধ্যমে আপনি দিন দিন আপনার বিজনেস করে আরো বড় এবং লাভজনক বানাতে পারেন।
৭. Fecebook (ফেইসবুক)
শুনতে অবাক লাগলেও সত্য এটাই যে, ফেইসবুক বর্তমানে বাংলাদেশে বিজনেসের জন্য অন্যতম সেরা এবং কার্যকর অ্যাপ। ফেইসবুক লাইভ ব্যবহার করে বর্তমানে অনেক বিজনেস তাদের বিজনেস কে প্রমোট করে এবং তাদের প্রোডাক্ট গুলো প্রাইস সহ শো করে, বিভিন্ন ফেসবুক পেজ খুলে কোম্পানি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে মাধ্যমে তাদের অনলাইন সেলিং চালিয়ে যাচ্ছে।এছাড়াও বিভিন্ন ভিডিও আপলোড দিয়ে একটি বিজনেস কোম্পানি এডসেন্স এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারে। এভাবে ফেসবুক এখন অন্যতম সেরা অ্যাপ হয়ে দাঁড়িয়েছ যা বিজনেসের জন্য পারফেক্ট। যেহেতু সোসিয়াল মিডিয়ার মধ্যে ফেসবুকের ইউজার সবচেয়ে বেশি, এইজন্য বিভিন্ন বিজনেস কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট প্রমোশন, লাইভ , সেলস প্রমোশন এর জন্য ফেসবুক অ্যাপ কেই বেছে নিচ্ছে।
৮. Bkash(বিকাশ)
আমরা বিভিন্ন ক্রয়, বিক্রয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন টাকা লেনদেন, পেমেন্ট, বিদ্যুৎ বিল পে করা, সব ধরনের আর্থিক লেনদেন এর জন্য বিকাশ বর্তমানে অন্যতম বিশ্বস্ত নাম। আর ব্যাবসায় যেহেতু শর্তই হচ্ছে লেনদেন সেখানে অবশ্যই বিকাশ আপনার বন্ধু। আপনি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে, আপনার দোকানের পেমেন্ট সিস্টেম, আপনার দোকানের বিল পে সহ যাবতীয় লেনদেন এবং অনলাইন সেলিং এর বিভিন্ন পেমেন্টের কাজ খুব অল্প সময়ে বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে করতে পারেন।
৯. Nagad(নগদ)
নগদ হলো বিকাশের আরেক রূপ অর্থাৎ বাংলাদেশের আরেকটি নামকরা ডিজিটাল ওয়ালেট হচ্ছে নগদ। ঠিক বিকাশের মতো প্রায় একই ধরনের সার্ভিস নিয়ে বিজনেস করে নগদ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর নাগরিক বিকাশের পাশাপাশি নগদও ব্যবহার করে থাকে , তাদের ক্যাশ আউট চার্জ বিকাশের থেকে কিছুটা কম, এছাড়াও তাদের কিছু ভাল অফার থাকে সব সময় যার কারণে দিন দিন নগদ জনপ্রিয় হচ্ছে। আপনি যদি কম খরচে এবং কম ইনভেস্টমেন্ট বিভিন্ন লেনদেনের কাজ করতে চান অনলাইন তাহলে আপনার জন্য নগদ ও আরেকটি ভাল অপশন।
১০. নিজের প্রতিষ্ঠানের এ্যাপ
ব্যাবসা বড় হোক কিংবা ছোট এর প্রসার এবং ডিজিটালাইজেশনের জন্য একটি মোবাইল এ্যাপ বা ওয়েবসাইটের বিকল্প নেই। আপনার প্রতিষ্ঠানটি আপনার কাস্টমার সহ সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করতে এটি সহায়ত করবে। খুব অল্প পরিশ্রম এবং খরচে আপনি প্রাথমিক ভাবে তা বানাতে পারবেন।
এগুলো ছিল আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাবসাকে আরো সহজ ও গতিশীল করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু মোবাইল অ্যাপ। দিন দিন অনলাইন শপিং যত জনপ্রিয় হবে ততই এই মোবাইল এ্যাপ গুলোর প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যাবহার বাড়তে থাকবে।